24 Nov 2024, 06:37 am

ভূমিকম্পে নিহতের স্মরণে শোক পালন করছে মরক্কো : মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে     

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মরক্কো রোববারের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে শোক পালন করছে। ভূমিকম্পে ২,০০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে। উদ্ধারকারী দল ধসে যাওয়া  গ্রামগুলোতে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আটকে থাকা জীবিতদের খুঁজে বের করার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ২,০১২ জন নিহত এবং ২,০৫৯ জনের বেশি আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
শুক্রবার ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি মারাকেশের পর্যটন কেন্দ্রের ৭২ কিলোমিটার (৪৫ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে আঘাত হানা ৬.৮-মাত্রার ভূমিকম্পটি প্রত্যন্ত এলাকার পুরো গ্রামগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।
মৌলে ব্রাহিমের পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা লাহসেন বলেন, ‘আমি সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি।’  তিনি তার স্ত্রী এবং চার সন্তানকে হারিয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা লাহচেনের তিন কন্যার মৃতদেহ তাদের বাড়ির ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার করেছে। কিন্তু এখনও তার স্ত্রী ও ছেলের মৃতদেহ খুঁজে পায়নি।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি এখন কিছুই করতে পারি না। আমি কেবল পৃথিবী থেকে দূরে সরে যেতে চাই এবং শোক করতে চাই।’
সৈন্য এবং জরুরী পরিষেবাগুলো দুর্গম পাহাড়ি  গ্রামে পৌঁছানোর জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। যেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের এখনও আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আল-হাউজ প্রদেশ, যেখানে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল, সেখানে সবচেয়ে বেশি ১,২৯৩ জন মারা গেছে, তারপরে তারউদান্ত প্রদেশে ৪৫২ জন মারা গেছে।
প্রত্যন্ত মৌলে ব্রাহিম গ্রামের আরেক বাসিন্দা বাউচরা স্কার্ফ দিয়ে তার চোখের জল মুছতেছিলেন, যখন তিনি লোকদের কবর খনন করতে দেখেছিলেন।
কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাইয়ের নাতি-নাতনি মারা গেছে’।
তিনি বলেন, ‘আমি ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা সরাসরি দেখেছি এবং আমি এখনও কাঁপছি। এটি একটি আগুনের বল যা তার পথের সবকিছু গ্রাস করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে প্রত্যেকেই পরিবার হারিয়েছে, তা আমাদের গ্রামে হোক বা অঞ্চলের অন্য কোথাও।’
কর্তৃপক্ষ তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে। ইসরায়েল, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বেশ কয়েকটি দেশ সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রতিবেশী আলজেরিয়ার সাথে মরোক্কোর শীতল সম্পর্ক চলছে। তবে এই বিপর্যয়ে মানবিক সহায়তা এবং আহতদের বহনকারী ফ্লাইটগুলোর জন্য দেশটি তার আকাশসীমা খুলে দিয়েছে, যা দুই বছর ধরে বন্ধ ছিল।
রেড ক্রস সতর্ক করেছে যে, ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
সংস্থার মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার পরিচালক হোসাম এলশারকাউই এক বিবৃতিতে বলেছেন,‘এটি এক বা দুই সপ্তাহের ব্যাপার হবে না, আমরা এমন একটি প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভর করছি যা বছর না হলেও কয়েক মাস সময় নেবে।’
এএফপি’র  সাংবাদিকরা জানিয়েছেন,মারাকেশের ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে তাফেঘাঘতে গ্রামটি প্রায় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এখানে খুব কম ভবনই এখন দাঁড়িয়ে আছে।
৭২ বছর বয়সী ওমর বেনহান্না বলেন, ‘আমার তিন নাতি এবং তাদের মা মারা গেছে।’ ‘ওরা এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে।’ শনিবার আশেপাশের কবরস্থানে বাসিন্দারা প্রায় ৭০ জনকে দাফন করেছে।
সন্ধ্যায়, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ছবি সম্প্রচার করে যাতে দেখা যায় আল-হাউজ অঞ্চলের মাটির ঘরের পুরো গ্রামগুলো সম্পূণরুপে ধ্বংস হয়ে গেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বলেছে, ‘সরকারি কর্তৃপক্ষ উদ্ধার তৎপরতা ত্বরান্বিত করতে এবং আহতদের সরিয়ে নেয়ার জন্য এখনও সক্রিয় রয়েছে’।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 12141
  • Total Visits: 1286739
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২১শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৬:৩৭

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018